এবিএনএ: সেই রক্তস্নাত, ভয়াল-বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট। বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের দিন। মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার চৌদ্দতম বার্ষিকী। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে সভ্যজগতের অকল্পনীয় এক নারকীয় হত্যাকান্ড চালানো হয় ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট এই দিনে। গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। রক্ত-ঝড়ের প্রচন্ডতায় মলিন হয়ে গিয়েছিল বাংলা ও বাঙালীর মুখ। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ এদিন মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। সেদিন যদি ঘাতকদের নিক্ষিপ্ত গ্রেনেড সমাবেশের জন্য ব্যবহৃত ট্রাকে বিস্ফোরিত হতো তবে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কোন সিনিয়র নেতাই প্রাণে রক্ষা পেতেন না। আর এটাই ছিল ঘাতকচক্রের মূল নীলনক্সা। গভীর শ্রদ্ধার সাথে-একুশে আগষ্ট, ভয়াবহ গ্রেনড হামলার ১৪তম বার্ষিকী স্মরণ করেছেন, সোমবার রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় হতাহতদের স্মরণে নিউ ইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসে মেজবান রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ডঃ সিদ্দিকুর রহমান ও পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ।
আলোচনা সভার শুরুতে নিহতদের স্মরণে ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সাইফুল আলম সিদ্দিকী।
২০০৪ সালে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় চালিয়ে ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা, কয়েকশত মানুষকে আহত করার জন্যে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান গংদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।
ডঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে, আরেকটি ১৫ই আগষ্টের জন্ম দেওয়ার এবং চিরতরে-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশুন্য ও দেশের গণতন্ত্র ধবংস করার জন্যই, ২১শে আগষ্ট ২০০৪, বঙ্গবন্ধু এ্যাভিউনিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী বিশাল সমাবেশে, তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আশ্রয়পুষ্ট সশস্ত্র জঙ্গী মৌলবাদীগোষ্টী এযাবতকালের নারকীয় ও বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ছিল
আরো বলেন, এই নৃশংস ও ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায়-জননেত্রী শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আইভি রহমানসহ নিহত হয় ২২ জন তাজাপ্রাণ হারায়। এবং আহত হয় শত শত নেতা-কর্মী। সেদিনের বোমার স্পিলিন্টার এখনও শরীরে বহন করে, জীবনের মতো পঙ্গু হয়ে, অসহায় অবস্থায়-বেঁচে আছে শত শত মানুষ। রক্তাক্ত একুশে আগষ্ট, ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৪তম বার্ষিকীতে-আইভি রহমানসহ একুশে আগষ্ট, নিহত সকল শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ‘শ্রদ্ধাঞ্জলী’ জানাই।
আরো বলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মদদেই যে, সেদিন নারকীয় বোমা হামলা ঘটানো হয়েছিল, তা এখন জনগণের কাছে পরিস্কার। সেদিনের ওই সমাবেশস্থলের চারিদিকে জোট সরকারের তিনশত পুলিশ কর্তব্যরত থাকলেও তারা ছিল মূলত নির্বিকার। ভয়াবহ এই গ্রেনেড হামলায় ঢাকার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হলেও, বঙ্গবন্ধু এ্যাভিউনিতে সেদিন রক্তের বন্যা বয়ে গেলেও, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পুলিশ বাহিনী সন্ত্রাসীদের লক্ষ করে একটি গুলিও ছুড়েনি। বরং নির্বিগ্নে সেখান থেকে সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে থাকে তৎকালীন জোট সরকারের পুলিশ বাহিনী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ‘জজ মিয়া’ নাটকের নামে গ্রেনেড হামলার মামলার তদন্তও ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছিল।
আরও বলেন তৎকালীন সময়ের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানও একুশে আগষ্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারা জড়িত। বেগম খালেদা জিয়াকেও এই মামলায় বিচারের আওতায় আনার জন্যও বর্তমান সরকারের নিকট জোর দাবী জানানই। এবং একুশে আগষ্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার সুষ্টু তদন্তের দোষী ব্যক্তি যারাই হোক না কেন, তাদের গ্রেফতার করে, তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীও জানিয়েছে, বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার পথ ত্বরান্বিত করতে প্রবাসীদেরকেও ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলকে সোচ্চার থাকার বিকল্প নেই। শুধু তাই নয়, সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় রাষ্ট্র পরিচালনায় অধিষ্ঠিত করার জন্যেও প্রবাসীদের সমর্থন বাড়াতে হবে’ ২১শে আগষ্ট, গ্রেনেড হামলায়-নিহত আইভি রহমানসহ সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন। এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তিন বারের সফল ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন ২১শে আগষ্ট ২০০৪ “বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দলকে নেতৃত্বশূন্য করতেই ওই হামলা হয়েছিল এবং তাতে প্রত্যক্ষ মদদ ছিল তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ নেতাদের। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তে সে ষড়যন্ত্র উদঘাটিত হয়েছে। তাই অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিকল্প নেই।”
সভায় নেতাদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি লুৎফুল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, উপ-প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান,নুরুল আফসার সেন্টু,গজনবী, আনিসুর রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুর রহমান ও সহ সভাপতি সাইকুল ইসলাম, নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ আতিকুল ইসলাম, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়ার মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিবলী সাদিক, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি কবির আলী,সৈয়দ কিবরিয়া জামান,যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান, জাতীয় শ্রমিকলীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, মহিলা আওয়ামী লীগের নূরুন নাহার গিনি ও যুবলীগের আহ্বায়ক তারেকুল হায়দার চৌধুরী যবু লীগের নান্টু মিয়া,পেনসিলভেনিয়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তালুকদার রহমান হীমু ও প্রমূখ।